Scaly-breasted
Munia নামটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত এবং অনেক কিছুই জানের এর সম্পর্কে। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই নামটির উৎপত্তি, নামের অর্থ অথবা বিজ্ঞান্সন্মত নাম। আমিও জানতাম না, কিন্তু যখন জানলাম তখন একে নতুন করে চিনলাম।
Scaly-breasted
Munia-এর বিজ্ঞান্সন্মত নাম Lonchura punctulata। বাংলায় একে তিলা মুনিয়াও বলা চলে। এর বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ তিলা সুঁইলেজ, গ্রিক ভাষা থেকে Lonkhe -এর মানে সুঁচালো ও ura -মানে লেজ এবং লাতিন ভাষা থেকে punctulatus -এর অর্থ তিলাযুক্ত; এই দুইএর সমন্বয়ে নামকরণটি করা হয়েছে। ১৭৫৮ সালে Carl
Linnaeus এই পাখির নাম দিয়েছিলেন Loxia punctulata, পরবর্তীকালে উইলিয়াম হেনরি সাইক্স পাখিটিকে Lonchura গণে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং নতুন নাম দেন Lonchura punctulata।
![]() |
PHOTO 1 : Scaly-breasted Munia |
মূলত মুনিয়া অনেক ধরনের হয়, যেমন, Tri-coloured Munia, Chestnut-breasted Munia, Black-throated Munia, White-headed Munia আরও অন্যান্য আছে তাদের কথা পরে হবে ক্ষণ, তবে Scaly-breasted Munia-তে ফিরে আসা যাক। একে অনেকে Spotted Munia বলেও চিনে থাকেন। এদের প্রায় ১১তি উপপ্রজাতি আছে যাদের আকার এবং রং সামান্য আলাদা। এই পাখিটি মূলত ভারত, বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন যায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় ৭১ লক্ষ ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এদের বাস।
এই পাখিটির শরীরের ওজন ১৩.৬ গ্রাম, দৈর্ঘ্য কমবেশী ১১.৫ সেমি, ডানা ৫.৬ সেমি, ঠোঁট ১.৩ সেমি, পা ১.৫ সেমি এবং লেজ ৩.৮ সেমি। প্রাপ্তবয়স্ক পাখিটির পুরো পিঠটাই বাদামি রঙের। কমর জুড়ে থাকে সাদা ডোরা দাগ, বা সাদা পালকে কালো রঙের বলয় আকার। লালচে-কমলা রঙের লেজটি যেমন ছোটো তেমন ছুঁচলোও বটে। গায়ের এই বলয় গুলি দেখে একে চেনা সহজ। স্ত্রী ও পুরুষ মুনিয়া এর চেহারা প্রায় একই ধরনের, শুধু পুরুষ পাখিটির থুতনি, স্ত্রী পাখিটির থুতনির তুলনায় অনেকটাই গাঢ়। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিটির পিঠ ও চোখ বাদামি রঙের হয়, যার সঙ্গে Black headed Munia -এর অনেকটা সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
বেশীরভাগ সময় এরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ায় যা সংখ্যায় প্রায় ১০০-এর কাছাকাছি। এছাড়াও অন্যান্য মুনিয়া এবং বাবুই পাখির সঙ্গে ভালই বন্ধুত্ব জার দরুন ওদের সঙ্গেও ঘুরে বেড়াতে খুব একটা অসুবিধে হয়না। ঘাসবীজ, রসালো ফল, পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি এদের আহার। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার যে তারা খাবার মুখে রেখেই তার শক্ত খোসা ছাড়িয়ে নিতে পারদর্শী।
বাবলা, ঝাউ, দেবদারু, খেজুরগাছের পাতার আড়ালে ও অন্যান্য ঝোপাকৃতি গাছে গোলাকার বাসা বানায় প্রায় ২-৫ মিটার উপরে শত্রুর নাগালের বাইরে। এদের বাসা বানানোর প্রধান উপকরণ ঘাস, লতা-পাতা ইত্যাদি। এরা শৌখিনও বটে, বিশেষ করে নিজেদের বাসার ব্যাপারে। কাশফুল ব্যবহার করে নিজেদের বাসাকে যেমন সুন্দর করে তোলে, তা দেখবার মত। শুধু শৌখিনই নয় বুদ্ধিমত্তারও পরিচয় দেয় এরা। এদের বাসা শত্রুদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য গোপন ও সরু পথ বানায়। মে থেকে সেপ্টেম্বর হল এদের প্রজননকাল। স্ত্রী মুনিয়া একই সঙ্গে ৪-১০টি ডিম পাড়ে যার আকার ১.৬X১.১ সেমি। স্বামী-স্ত্রীতে মিলে তা দেয় তাদের ডিমে, আর ১৩-১৬ দিন পরেই ডিম ফেটে বেরিয়ে আসে বাচ্চা মুনিয়ারা আমদের এই অপরূপ পৃথিবীতে।
বর্তমানে সাধারন মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। একাধারে প্রকৃতি ও মানুষের মনে বেশ ভালই জায়গা করে নিয়েছে। এখন রাস্তাঘাট, চলারপথে, পশুপাখির দোকানে হরদমই পাওয়া যায়। মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিক্রেতারা পাখিগুলির গায়ে নানান উজ্জ্বল রং লাগিয়ে দেয়, ও রমরমিয়ে বিক্রি শুরু করে। বাংলাদেশের গাজীপুরসহ আর অন্যান্য জায়গায় জাল ব্যবহার করে পাখি ধরা হয়, যার ফলসরূপ বাংলাদেশে এদের সংখ্যা বেশ আশঙ্কাজনক পরিস্তিতিতে।
তাই সকল পাঠক ও সমস্ত মানুষের কাছেই অনুরোধ দয়া করে পাখিদের স্বাধীনতা তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেবেন না। ওদেরও জীবনেরও দাম আছে, অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা বোধকরি আমাদের শোভা পায়না। পাখি সৌন্দর্য তাদের স্বাধীনতায়, খাঁচার মত জেলখানায় নয়। পাখিকে ভালবাসুন, প্রকৃতিকে ভালবাসুন, দেখুনিই না সেই অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে রোমাঞ্চিত, মুগ্ধ করে কিনা!
FACEBOOK LINK : www.facebook.com/mrinmoychocophotography
Awesome
ReplyDeleteGood one.
ReplyDelete